আমরা কারা

প্রারম্ভিকা

মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত হাতিয়া বাংলাদেশের মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছাস, নদীভাঙন এই দ্বীপের মানুষের নিত্যসঙ্গী। ১৯৭০ সালে ১২ নভেম্বর এর সুপার সাইক্লোনে হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপসহ এই উপকূলের প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ এবং অগণিত গবাদি পশু নিহত হয়। কেবল যথাসময়ে সাইক্লোনের বিপদ সংকেত সাধারণ মানুষের নিকট না পৌঁছানোর কারণে এই ব্যপক প্রানহাণি ঘটে। ঘূর্নিঝড় পরবর্তিতে জাপান রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাথে হাতিয়া দ্বীপের কিছু তরুণ উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সম্পৃক্ত হয়ে অসহায়, আহত, নিরন্ন মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।

১৯৭১ এ এই ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চলার মধ্যেই আরম্ভ হয় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। সেই তরুণরাই দেশমাতৃকাকে রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পরে মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হয় কিন্তু বাংলাদেশের উপক‚লের মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবতর্ন আসে না। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাসে প্রাণ হাতে নিয়ে বসবাস করতে হয় উপক‚লে। খাদ্য, বাসস্থান, নিরাপদ পানি, চিকিৎসা সব কিছ‚র অভাব নিয়ে বসবাস। এরকম একটি প্রতিকুল পরিবেশ থেকে উপক‚লের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল আলমের নেতৃত্বে যুদ্ধ ফেরত কিছু মুক্তিযোদ্ধার গড়ে তোলেন “দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা শুরুতেই ভুমিহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সাথে সমম্বয় করে হাতিয়া ও নিঝুমদ্বীপে প্রায় ৩০০ মানুষের জন্য ৬,০০০ একর খাসজমি বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করে। সুপেয় নিরাপদ পানির জন্য হাতিয়া এবং নিঝুমদ্বীপে প্রায় ২,০০০ গভীর নলক‚প স্থাপন করে। হাজার হাজার যুবক ও যুবমহিলা বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে স্বাবলম্বি করার ব্যবস্থা করেছে। মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার, বাল্য বিবাহসহ সকল কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে সচেতন করা, তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বি করার জন্য আইসিটি প্রশিক্ষণ, বৃক্ষরোপনসহ খেলাধুলার মাধ্যমে মেধা ও মননের বিকাশ ঘটাতে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এ সকল তথ্য উপক‚লের সকলের নিকট পৌঁছাচ্ছে না।

পুরোনো আমলের হ্যান্ডমাইক দিয়ে যেমন ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত যথাসময় উপক‚লের সকল প্রান্তের মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় না, তেমনি দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের কথাও দ্বীপের সকল প্রান্তে পৌছায়ে না। আবহাওয়ার সংবাদ, কৃষি সংবাদ, বাজার দর, লঞ্চ বা সিট্রাক ছাড়ার সময় সূচি, কোথায় শিশুদের টীকা দেয়া হচ্ছে এসকল কোন তথ্য দ্বীপের সকল মানুষ জানেনা।

সাগর আর দ্বীপের মিতালী হাতিয়া দ্বীপের সকল মানুষের নিকট অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনক্রমে ১২ নভেম্বর ২০১৫ সালে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি জনাব আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেডিও সাগরদ্বীপ ৯৯.২ এফ এম এর শুভ উদ্ধোধন ঘোষনা করেন। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেগম আয়শা ফেরদাউস এমপি, মুরতজা আহমেদ, সচিব তথ্য মন্ত্রনালয়, বদরে মুনির, জেলা প্রশাসক, নোয়াখালী, মাহাবুবুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি, চট্টগ্রাম, মোঃ আঃ করিম ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পিকেএসএফ এবং মিঃ মাতুসি ফুজিতা, প্রেসিডেন্ট,বিএইচএন এ্যসোসিয়েসন, জাপান ও মিঃ মেকিও হাতাইদা, মূখ্য প্রতিনিধি জাইকা।

“আঙ্গো রেডিও আঙ্গো কতাকয়” এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপকুলের মানুষের আশা আকাঙ্খাার প্রতীক হয়ে রেডিও সাগরদ্বীপের পদচারণার শুরু হয়।

লক্ষ্যঃ

দুর্যোগ মোকাবেলায় উপক‚লীয় মানুষের সক্ষমতা গড়ে তোলা , সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আশা-আকাঙ্খা প্রকাশের সুযোগ করে দেয়া, তরুণ প্রজম্মকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করা, মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশ প্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত করা। লোকজ সংস্কৃতি চর্চায় সক্রিয় ভূমিকা রাখা।

মিশনঃ

সকল বয়স, শ্রেণি-পেশার মানুষের চাওয়া পাওয়ার বিষয়গুলোকে রেডিওতে তুলে ধরে একটি নতুন ধারার গণমাধ্যম সৃষ্টি করা।

ভিশনঃ

প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী এবং কণ্ঠহীন মানুষের কণ্ঠ জাগরণের একটি নিরপেক্ষ মাধ্যম হবে রেডিও সাগরদ্বীপ। তরুণ প্রজম্মের মেধা, মননশীলতা ও সৃজনশীলতা এবং প্রবীণদের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দেয়ার একটি আদর্শ মাধ্যম হবে রেডিও সাগরদ্বীপ।

ফ্রিকোয়েন্সিঃ

৯৯.২ এফএম (২০০ মেগাহার্জ), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক প্রদত্ত।

লাইসেন্সঃ

লাইসেন্স নং- ৩২/ ১৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখ: ইং। গণপ্রজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত।